জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের প্রতি আস্থা হারিয়ে তাঁর অপসারণ দাবি করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাঁকে অপসারণের আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এ দাবিতে আন্দোলনকারীরা লাগাতার অসহযোগিতার কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতারা তাঁদের দাবি তুলে ধরেন। অতিরিক্ত কর কমিশনার মোনালিসা শাহরিন, উপকর কমিশনার রইসুন নেসা এবং এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব শাহাদাত জামিল সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। তাঁদের মতে, এনবিআর চেয়ারম্যানের প্রতি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আস্থা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় তাঁর পদে থাকা আর সম্ভব নয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আন্দোলনকারীরা প্রতিদিন অতিরিক্ত সময় কাজ করে রাজস্ব ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। প্রাথমিকভাবে প্রতিদিন তিন থেকে চার ঘণ্টা বেশি কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, আগামী মাসে ‘কেমন এনবিআর চাই’ শিরোনামে একটি সেমিনার আয়োজনের কথাও জানানো হয়।এর আগে গতকাল রোববার রাতে চলমান আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছিল।
তবে আজ থেকে সারা দেশের সব শুল্ক ও কর দপ্তরে পূর্ণদিবস কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এনবিআর নিয়ে জারি করা অধ্যাদেশ সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে আন্দোলনকারীরা তাঁদের দাবিতে অনড় রয়েছেন।
এনবিআর সংস্কার নিয়ে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে, ১২ মে জারি করা অধ্যাদেশের মাধ্যমে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে দুটি নতুন বিভাগ চালুর সিদ্ধান্ত আন্দোলনের মূল কারণ। আন্দোলনকারীদের দাবি, এই অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক সুপারিশগুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে।
এই পরিস্থিতি সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজস্ব সংগ্রহে এনবিআরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই সংকট দ্রুত সমাধান করা না গেলে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তথ্যসূত্র: প্রথম আলো